আরশ-পরশ জানে না, মা আর আসবে না
![](http://www.europentv.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/02/15/photo-1424007623.jpg)
পরশ আর আরশ। দুই ভাই। পরশের বয়স ছয়, আর আরশের সাড়ে তিন। আজ সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরই তাদের নানাবাড়ি নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে মায়ের ছবি হাতে নিয়ে দাওয়ায় বসে বারবার নানিকে প্রশ্ন করছে, ‘আম্মা কই? আম্মা কই?’
কিন্তু নানির মুখে কোনো উত্তর নেই। আঁচলে মুখ চেপে কেবলই কাঁদছেন তিনি। অবুঝ দুই নাতিকে কীভাবে জানাবেন, তাদের মা আর নেই! নিপীড়নের আগুনে পুড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আজ দুপুরে মারা গেছেন গৃহবধূ মুক্তি খাতুন (৩০)।
আজ ভোরে পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর মৎস্যজীবীপাড়া গ্রামে আগুনে মারাত্মক দগ্ধ হন মুক্তি। তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মুক্তি মৎস্যজীবীপাড়া গ্রামের মহব্বত আলীর স্ত্রী এবং পাবনা পৌর এলাকার নারায়ণপুর জামাইপাড়ার জসিম উদ্দিনের মেয়ে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসানুল হক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে সদর থানা পুলিশ। স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আট-নয় বছর আগে বিয়ে হয়েছিল মুক্তির। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মুক্তির ওপর নির্যাতন চালাত। আজ রোববার ভোরে ঘুমন্ত অবস্থায় মুক্তির হাত-পা ও মুখ বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ সময় মুক্তির স্বামী বাড়িতে ছিলেন না।
ওসি আরো জানান, মুক্তির আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাঁকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকরা সকাল ৮টার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে মারা যান তিনি। আগুনে মুক্তি খাতুনের শরীরের বেশির ভাগ অংশ ঝলসে যায়। এ ঘটনায় মুক্তির বাবা বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মোজাম্মেল হক মুক্তির দেবর মোহাম্মদ আলীকে (৩০) আটক করেছেন। ঘটনার পর থেকে শ্বশুরবাড়ির অন্যরা পলাতক।